স্কুলছাত্রীকে গণধ’র্ষণ, ভিডিও ধারণ

নোয়াখালীর চাটখিল পৌরসভা সংলগ্ন মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের নাথপাড়া গ্রামে নবম শ্রেণি পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীকে প্রেমের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ করা হয়েছে। পরে সে ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেবার ভয় দেখিয়ে লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে ধর্ষকরা ।

সরেজমিনে গিয়ে ধর্ষিতার পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নাথপাড়া গ্রাামের মৃত আবদুল মালেকের নবম শ্রেনিতে পড়ুয়া কন্যা লিপি আকতার (ছদ্মনাম) সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো হিন্দু ধর্মাবলম্বী চাটখিল পৌরসভার মির্জাপুর গ্রামের চন্দ্র ভূষণ দেবনাথের ছেলে মির্জাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী পলাদ দেবনাথ (২৫)। গত জুলাই মাসের ৬ তারিখ রাত আনুমানিক ১টার দিকে প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে লিপির সাথে দেখা করার কথা বলে তাদের ঘরে গিয়ে তাকে ধর্ষণ করে প্রেমিক পলাদ দেবনাথ।

ধর্ষণ শেষে কিছুক্ষণ পর ধর্ষক পলাদ এর দুই বন্ধু একই এলাকার মোশারফ হোসেনের ছেলে মনির হোসেন (২৪) ও শহীদ উল্লাহর ছেলে হেলাল (৩০) ধর্ষিতা কিশোরীকে ধর্ষণের কথা ফাঁস করিয়ে দেবে বলে ভয় দেখিয়ে ঘর থেকে বের করে আনে।

তারপর বাড়ীর পাশে লিপি আকতারকে নিয়ে গিয়ে মনির তাকে ধর্ষণ করে এবং অপর বন্ধু হেলাল তার মোবাইলে তা ভিডিও ধারন করে। এই সময় প্রেমিক পলাদ কোনো প্রতিবাদ না করে পাশেই দাড়িয়ে ছিলো।

পরে কিছুদিন অতিক্রম হওয়ার পর ধারন করা ধর্ষণের ভিডিওর কয়েকটি ছবি লিপির পরিবারকে দেখিয়ে তারা ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেবার ভয় দেখিয়ে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।

কিন্তু লিপির পরিবার হতদরিদ্র হওয়ায় তারা এত টাকা দিতে অপারগ হওয়ায় তারা স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা লুঙ্গী ফরিদের ধারস্থ হন। গত বুধবার ওই আওয়ামী লীগ নেতা বিচারের নামে প্রহসন করে আসামিদের পরে শাসন করবে বলে আকলিমার পরিবারকে সান্তনা দিয়ে এই বিষয়ে আর বাড়াবাড়ি না করার কথা বলে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়।

পরে বিষয়টি স্থানীয় কয়েকজন তরুণ জানতে পেরে এটিএন নিউজ ও প্রতিনিধি আরেফিন শাকিলকে জানায় এবং ফাঁস হওয়া কয়েকটি ছবি (ধর্ষণের স্ক্রিন শর্ট) এই প্রতিবেদককে সরবরাহ করে।

ধর্ষিতার বড় ভাই মো: হারুন জানান, ধর্ষক মনির এই পর্যন্ত ৪দিন আমার কাছে টাকা চাইতে আসছে। টাকা না দিলে ধর্ষণের ভিডিও সোস্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে গেছে। আমরা অত্যন্ত গরীব এবং অসহায় হওয়ায় এতদিনেও থানায় গিয়ে মামলা করার সাহস পাইনি।

এ ব্যাপারে চাটখিল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইমাউল হক পিপিএম বলেন, ঘটনাটি তাদের জানা ছিল না সাংবাদিকের কাছেই প্রথম শুনলেন। খবর পেয়ে পুলিশ বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত মির্জাপুরে অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ধর্ষক পলাদ, মনির ও ভিডিও ধারণ করা হেলালকে গ্রেফতার করে।

তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে।